রাজধানীর গুলিস্তান, বঙ্গবাজার, চকবাজার, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকা, মৌচাক এবং বসুন্ধরার বিভিন্ন শপিংমলগুলোতে সরেজমিনে ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতার ব্যস্ততা দেখা যায়।
বিক্রেতারা তাদের দোকানে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে শীতকালীন বিভিন্ন রঙের কাপড় বিশেষ করে কম্বল, জ্যাকেট, শাল, সোয়েটার ও ব্লেজার সাজিয়ে রেখেছেন।
শীত মৌসুমে ক্রেতাদের কাছে কম্বলের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। এছাড়া সোয়েটার, জ্যাকেট, শাল, ব্লেজার ক্রয় করতেও দেখা গেছে অনেককে। শপিংমলগুলোতে বিভিন্ন ধরণের ভ্যাসলিন, ময়েশ্চারাইজার ক্রিম, লোশন, চ্যপস্টিক এবং গ্লিসারিন কিনতেও দেখা গেছে।
নিউমার্কেট এলাকায় স্নাতক পড়ুয়া শিক্ষার্থী মনিরা মনি বলেন, ‘তিন’শ টাকা দিয়ে একটি শাল কিনেছি। নিউমার্কেটে সন্ধ্যায় ক্রেতাদের ভীড় খুব বেশি থাকে। আমি গতকাল ভ্যাসলিন সহ শীতের বেশ কিছু জিনিস কেনেছি। আজ বন্ধুদের সাথে ঘুরতে এসেছি।’
মনিরা আরও বলেন, ‘আগের বছরের তুলনায় এবছর দাম একটু বেশিই মনে হচ্ছে,‘কোম্পানিগুলো তাদের দাম বাড়িয়ে দিলে আমাদের তো কিছু করার নেই, তখন আমাদের বেশি দামেই কিনতে হয়।’
উত্তরার বাসিন্দা তানিয়া রহমান জানান, বসুন্ধরা শপিং থেকে চারশ টাকা দিয়ে একটি সোয়েটার কিনেছেন। তিনি বলেন,আমাদের দেশের মার্কেটে যথেষ্ট নতুন এবং ভালো মানের কাপড় রয়েছে যে কারণে আমি ভাইয়ের জন্য সোয়েটারটি কিনেছি। পরের সপ্তাহে ভারতে যাব এবং সেখান থেকে আমার শীতের পোশাক কিনব। কারণ, আমাদের দেশের তুলনায় সেখানে জিনিসগুলো কম দামে পাওয়া যায়।
বঙ্গবাজারের বিক্রেতা আনিস হাওলাদার জানান, গতমাসে পাইকারি দামে অনেক কম্বল বিক্রি করেছি, তবে এখন খুচরা দামেই বেশি বিক্রি হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের এখানে বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রেতারা আসেন। নভেম্বর মাসে পাইকারি বিক্রি বেশি হয়। এখন থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খুচরা দামে বিক্রি বেশি হবে। তবে এটি শীতের উপরও নির্ভর করবে বলে তিনি জানান।
আনিস জানান, তারা একটি কম্বল ৯০ থেকে ৫০০ টাকায় ক্রয় করেন এবং ৪৫০ থেকে ৪০০০ টাকায় বিক্রি করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা পুরো বছর প্যান্ট এবং টি শার্ট বিক্রি করি তবে শীতকালের ৩-৪ মাস কম্বল বিক্রি করি।’
মহসিন মিয়া নামে এক দিনমজুর জানান, ‘বড় বড় শপিংমলে কেনার সামর্থ আমার নেই। তাই ফুটপাতে কম দামের কাপড়ই আমি ক্রয় করি।’
তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী- সন্তানরা গ্রামে থাকেন, তাদের জন্য বায়তুল মোকররম মসজিদ এলাকা থেকে সোয়েটার এবং শাল কিনেছি।’
দেশের আমদানি করা পোশাক ব্যবসায়িক কেন্দ্র রাজধানীর পলওয়েল সুপার মার্কেট এর সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিনের সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, আমরা আমদানি করা ভালো মানের পোশাক বিক্রি করছি, এগুলো শীতকালেই বেশি বিক্রি হয়।
‘শীতের প্রকোপ থাকায় গত কয়েকদিন যাবত বিক্রি বেড়েছে। শীত আরও বাড়লে আমাদের বিক্রি আরও কয়েকগুণ বাড়বে ‘যোগ করেন তিনি ।’